লক্ষী পুজোর আগেই সন্দেহের বশে স্ত্রী লক্ষীকে খুন করলো স্বামী

17th October 2021 9:30 pm বর্ধমান
লক্ষী পুজোর আগেই সন্দেহের বশে স্ত্রী লক্ষীকে খুন করলো স্বামী


প্রদীপ চট্টোপাধ্যায় ( বর্ধমান ) :  লক্ষ্মী পুজোর আগেই নিষ্ঠুর স্বামীর নৃশংস হামলায় প্রাণ খোয়ালেন এক জীবন্ত লক্ষ্মী। রবিবার সকালে মর্মান্তিক এই ঘটনাটি ঘটেছে  পূর্ব বর্ধমানের কালনা থানার ইশবপুর গ্রামে।  মাথায় শাবল দিয়ে আঘাত করে বিছানায় ঘুমন্ত অবস্থায় থাকা স্ত্রী লক্ষ্মী বিশ্বাস (২৫) কে খুনের অভিযোগে পুলিশ স্বামী দীপঙ্কর বিশ্বাস ওরফে বিজুকে গ্রেপ্তার করেছে। ময়নাতদন্তের জন্য এদিনই বধূর  মৃতদেহ পাঠানো হয়  বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ।খুনি জামাইয়ের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি করেছেন নিহত বধূর মা।  পুলিশ ও পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, বধূ  লক্ষ্মী বিশ্বাসের বাপের বাড়ি কালনা থানার  সুলতানপুর পঞ্চায়েতের ইসবপুর গ্রামে। বছর 
৫-৬ আগে হুগলীর চুঁচুড়া নিবাসী দীপঙ্কর বিশ্বাসের সঙ্গে লক্ষ্মীর বিয়ে হয় । তাঁদের দুটি সন্তানও রয়েছে। বধূর আত্মীয় গৌতম দাস বলেন ,লক্ষ্মীর দাম্পত্য জীবন শুখের ছিল না । অন্য কোন পুরুষের সঙ্গে লক্ষ্মীর সম্পর্ক রয়েছে এমন মিথ্যা সন্দেহ করতো তাঁর স্বামী দীপঙ্কর। এই মিথ্যা সন্দেহ নিয়ে তাঁদের দাম্পত্য জীবনে অশান্তি শুরু হয় ।লক্ষীকে তাঁর স্বামী মারধোর করা শুরু করে । স্বামীর নির্যাতন সহ্য করতে না পেরে লক্ষ্মী 
কালনায় তাঁর বাপের বাড়িতে চলে আসে । বেশ কয়েক বছর ধরে লক্ষ্মী বাপের  বাড়িতেই রয়েছে।তাঁর স্বামী দীপঙ্কর কালনায় শ্বশুর বাড়িতে আসাযাওয়া করতো ।গৌতমবাবু আরও বলেন ,শ্বশুরবাড়িতে এসেও রবিবার  সাতসকালে লক্ষ্মীর সঙ্গে চরম অশান্তি করে জমাই দীপঙ্কর । তারপর লক্ষ্মী যখন তাঁর বাপের বাড়ির বিছানায় ঘুমিয়েছিল তখন দীপঙ্কর ভারি একটা শাবল নিয়ে লক্ষ্মীর মাথায় সজোরে আঘাত করে । লক্ষ্মী আর্ত চিৎকার শুরু করলে পরিবারের সবাই ঘরে ঢুকে রক্তাত অবস্থায় তাঁকে উদ্ধার করে কালনা মহকুমা হাসপাতালে নিয়ে যায় । সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক লক্ষ্মী বিশ্বাসকে মৃত বলে ঘোষণা করেন ।এই খবর পেয়ে কালনা থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌছে বধূর 
স্বামী দীপঙ্কর বিশ্বাস কে ধরে থানায় নিয়ে যায় ।এদিনই ঘটনা সবিস্তার উল্লেখ করে বধূর মা তাঁর জামায়ের বিরুদ্ধে কালনা থানায় অভিযোগ দায়ের করেন। 
এসডিপিও ( কালনা ) সপ্তর্ষি ভট্টাচার্য্য জানিয়েছেন ,“পুলিশ ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে । মৃতার মায়ের অভিযোগের ভিত্তিতে  খুনের মামলা রুজু করে বধূর স্বামী দীপঙ্কর বিশ্বাসকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে“ । 

 





Others News

MEMARI . একবছর আগে আবেদন করেও মেলেনি জাতিগত শংসাপত্র : হন‍্যে হয়ে ঘুরছেন মা

MEMARI . একবছর আগে আবেদন করেও মেলেনি জাতিগত শংসাপত্র : হন‍্যে হয়ে ঘুরছেন মা


প্রদীপ চট্টোপাধ্যায় ( বর্ধমান ) : প্রায় এক বছর আগে আবেদন করেও মেয়ের জাতিগত শংসাপত্র মেলেনি । আবেদনকারীদের জাতি শংসাপত্র দেওয়ার
ক্ষেত্রে দেরি করা যাবেনা বলে জানিয়ে দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী।কিন্তু বাস্তবে ঠিক তার উল্টোটাই ঘটে চলেছে।প্রায় এক বছর আগে  চতুর্থ শ্রেণীতে পাঠরত মেয়ের ওবিসি শংসাপত্র পাওয়ার জন্য নির্দিষ্ট নিয়ম মেনে  আবেদন করেছিলেন মা।কিন্তু মেয়ে কে পঞ্চম শ্রেণীতে ভর্তির সময় এগিয়ে আসলেও জাতি  শংসাপত্র আজও না মেলায় কার্যত হতাশ হয়ে পড়েছেন পূর্ব বর্ধমানের মেমারির রাধাকান্তপুর নিবাসী ঊর্মিলা দাস।ওবিসি শংসাপত্র পাবার জন্য ঊর্মিলাদেবী বৃহস্পতি বার মেমারি ১ ব্লক বিডিও অফিসে লিখিত ভাবে আবেদন জানিয়েছেন। শংসাপত্র পাবার জন্য বিডিও সাহেব কি ব্যবস্থা করেন সেদিকেই এখন তাকিয়ে ঊর্মিলাদেবী। 

বিডিওকে লিখিত আবেদনে ঊর্মিলাদেবী জানিয়েছেন ,তাঁর স্বামী মানিক দাস দৃষ্টিহীন প্রতিবন্ধী ।বছর ১০ বয়সী তাঁদের একমাত্র কন্যা গ্রামের বিদ্যালয়ে চতুর্থ শ্রেণীতে পাঠরত কালে তাঁর ওবিসি শংসাপত্র পাবার জন্য তিনি নির্দিষ্ট নিয়ম মেনে চলতি বছরের ২৪ জানুয়ারী আবেদন করেছিলেন।  উর্মিলাদেবী বলেন ,তার পর থেকে দীর্ঘ সময় পেরিয়ে  গেলেও তিনি তাঁর মেয়ের ওবিসি শংসাপত্র পান না।মেয়ের পঞ্চম শ্রেণীতে ভর্তির সময় এগিয়ে আসায় গত অক্টোবর মাসের শেষের দিকে তিনি শংসাপত্রের বিষয়ে মেমারি ১ ব্লকের বিডিও অফিসে খোঁজ নিতে যান।জাতি শংসাপত্র বিষয়ের বায়িত্বে থাকা বিডিও অফিসের আধিকারিক তাঁকে অনলাইনে এই সংক্রান্ত একটি নথি বের করে আনতে বলেন । অনলাইনে সেই নথি বের করেনিয়ে তিনি ফের ওই আধিকারিকের কাছে যান । তা দেখার পর ওই আধিকারিক তাঁকে  ২০ দিন বাদে আসতে বলেন । ঊর্মিলাদেবী বলেন , তিনি ২৫ দিন বাদে যাবার পর ওই আধিকারিক তাঁকে গোপগন্তার ২ গ্রাম পঞ্চায়েতে গিয়ে খোঁজ নেবার কথা বলেন । তিনি এরপর গ্রামপঞ্চায়েত অফিসে খোঁজ নিতে যান । নথি ঘেঁটে পঞ্চায়েত কর্তৃপক্ষ জানিয়ে দেয় তাঁর মেয়ের নামে কোন ওবিসি শংসাপত্র পঞ্চায়েতে আসে নি।ঊর্মিলাদেবী দাবী করেন ,এই ভাবে তিনি একবার বিডিও অফিস , আবার পঞ্চায়েত অফিসে দরবার করে চলেন । কিন্তু তাতে কাজের কাজ কিছু হয় না। মেয়ের ওবিসি শংসাপত্র পাবার জন্য  গত ১৩ ডিসেম্বর ফের তিনি বিডিও অফিসে যান ।ওই দিনও বিডিও অফিসের জাতি শংসাপত্র বিষয়ক বিভাগের আধিকারিক তাঁকে একই ভাবে পঞ্চায়েত অফিসে খোঁজ নিতে যেতে বলে দায় সারেন। পরদিন তিনি পঞ্চায়েত অফিসে খোঁজ নিতে গেলে পঞ্চায়েত কর্তৃপক্ষ ফের জানিয়ে দেয় তাঁর মেয়ের নামে  ওবিসি শংসাপত্র পঞ্চায়েতে আসে নি । কেন মেয়ের জাতি শংসাপত্র পাচ্ছেন না সেই বিষয়ে  না পঞ্চায়েত না ব্লক প্রশাসনের কর্তৃপক্ষ কেউই তাঁকে কিছু জানাতে পারেন । ঊর্মিলাদেবী বলেন ,পঞ্চম শ্রেণিতে ভর্তির আগে তার মেয়ে যাতে ওবিসি শংসাপত্র পেয়ে যায় তার ব্যবস্থা করার জন্য এদিন তিনি বিডিওর কাছে লিখিত ভাবে আবেদন জানিয়েছেন । মেমারী ১ ব্লকের বিডিও আলী মহম্মদ ওলি উল্লাহ এদিন বলেন ,“জাতি শংসাপত্র পাবার জন্য হাজার হাজার আবেদন জমা পড়ছে । তবে ঊর্মিলাদেবীর কন্যা দ্রুত যাতে বিবিসি শংসাপত্র দ্রুথ পান সেই বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে “। মেমারির বিধায়ক মধুসূদন ভট্টাচার্য্য বলেন,’মেমারি  বিধানসভা এলাকার আবেদনকারীরা দ্রুত যাতে জাতি শংসাপত্র পান সেই বিষয়ে প্রশাসনকে আরও তৎপর হওয়ার কথা বলবো’।